মেহেরপুর একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এলাকা হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে এখানে কোন দৈনিক বা পাক্ষিক পত্রিকা চালু নেই। বৃটিশ আমল থেকে মেহেরপুরে কিছু পত্রিকা চালু ছিল। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামের রেয়াজ উদ্দিন আহমেদের সম্পাদনায় ১২৯৮ বঙ্গাব্দ সনে ‘ইসলাম প্রচারক’ এবং ১৩১২ বঙ্গাব্দ সনে ‘সোলতান’ নামে দু’টি পত্রিকা প্রকাশিত হতো। মেহেরপুরের কিছু পত্রিকার তালিকা নিম্নে দেয়া হলোঃ-
ক্রম |
পত্রিকার নাম |
ভূমিকা |
প্রকাশ ও বন্ধ হবার তারিখ |
(১) |
মাসিক ‘সাধক’ |
মেহেরপুরেরমুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুরগ্রামে অধিবাসী হীরালাল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বাংলা১৩১৯ সালের ১লা বৈশাখ‘নদীয়া সাহিত্য সম্মিলনী’নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠিতহয়। এসংগঠনের উদ্যোগে বাংলা ১৩২০ সালের ১লা বৈশাখে ‘সাধক’নামে উন্নতমানের একটিমাসিক পত্রিকা প্রকাশ করে। এ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন- সতীশ চন্দ্রবিশ্বাস এবংপ্রকাশক ছিলেন- অবিনাশচন্দ্র বিশ্বাস। পত্রিকাটি দু’বছরনিয়মিতভাবে কৃষ্ণনগরথেকে মুদ্রিত হয়ে প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকাটিকেমেহেরপুরের ইতিহাসের প্রথমসংবাদপত্র হিসেবে গন্য করা হয়ে থাকে। দু’বছরেরপ্রকাশনায় সাধক পত্রিকায়সাহিত্য-সংস্কৃতির পাশাপাশি তৎকালীন সময়ের নদীয়ারবিভিন্ন জনপদের বিবরণপ্রকাশিত হতো। পত্রিকাটি খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল বলেজানা যায়। |
প্রকাশকালঃ ১লা বৈশাখ ১৩২০ বঙ্গাব্দ বন্ধ হবার তারিখঃ প্রকাশনার দু’বছর পর |
(২) |
মাসিক ‘পল্লী শ্রী’ |
‘সাধক’বাংলা ১৩২০ সাল হতে দু’বছরপ্রকাশনার পর পরবর্তী দু’দশকেরও অধিককাল মেহেরপুরথেকে কোন পত্রপত্রিকাপ্রকাশ হয়েছে বলে জানা যায় না। ‘পল্লী শ্রী’নামে একটিমাসিক পত্রিকাবাংলা ১৩৪২ সালের শেষের দিকে প্রথম প্রকাশিত হয়ে কখনো নিয়মিত কখনোঅনিয়মিতভাবে ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পূর্ব পযর্ন্ত প্রকাশিত হয়। অমরেন্দ্রবসুওরফে হাবুবাবুর সম্পাদনায় মেহেরপুরের বর্তমান সামসুজ্জোহা পার্কেরপ্রধান সড়কেরপশ্চিম দিকে অবস্থিত প্রমথ চন্দ্র রায়ের কমলা প্রেস থেকেপত্রিকাটি প্রকাশিতহতো। পাকিস্থান সৃষ্টির পর প্রমথবাবু কমলা প্রেসবিক্রি করে দেন। ফলে ‘পল্লীশ্রী’বন্ধ হয়ে যায়। কবি অজিত দাস, দীনেন্দ্রকুমার রায় প্রমূখ নিয়মিত এ পত্রিকায়লিখতেন। |
প্রকাশকালঃ ১৩৪২ বঙ্গাব্দ বন্ধ হবার তারিখঃ ১৯৪৭ খ্রিস্টীয় সন |
(৩) |
পাক্ষিক ‘সীমান্ত’ |
১৯৪৭হতে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত মেহেরপুর থেকেকোন পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হয়নি। ১৯৬২ সালেমেহেরপুর থানা কাউন্সিলেরউদ্যোগেসীমান্ত নামে একটি পাক্ষিক পত্রিকাপ্রকাশিত হয়। সম্পাদক ছিলেনমোঃ মফিজুর রহমান। মেহেরপুর বড়বাজারের এডলিকপ্রিন্টিং প্রেস থেকেপত্রিকাটি চার বছর নিয়মিত প্রকাশিত হয় এবং ১৯৬৬ সালেরশেষের দিকেপত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। কুতুবপুরের জনৈক শিল্পী মোঃ নাসিরুদ্দিন ‘আমকাঁঠাল লিচুতে ভরপুর, তারই নাম মেহেরপুর’- এই কথাগুলো লিখে পত্রিকাটিরপ্রচ্ছদ এঁকে দিয়েছিলেন। |
প্রকাশকালঃ ১৯৬২ খ্রিস্টীয় |
(৪) |
‘প্রবাহ’ |
খ্রিস্টীয়১৯৭৯ সালের ১৩ই মার্চ, বাংলা১৩৮৫ সালের ২৮শে ফাল্গুন মেহেরপুর থেকে ‘প্রবাহ’নামে একটি সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাস বিষয়ক বুলেটিন প্রকাশিত হয়। প্রবাহেরসম্পাদকমন্ডলীছিলেন মুহঃ আনছার-উল-হক, মোঃ আলী ওবায়দুর রহমান ও মোঃ নাসিরউদ্দিনমির।মেহেরপুর বড়বাজারের এডলিক প্রিন্টিং প্রেস থেকে এটি প্রকাশিত হতো কয়েকটিমাত্র অনিয়মিত সংখ্যা প্রকাশিত হয়। অনিয়মিত এবং সাহিত্য বিষয়ক বুলেটিন হলেওপত্রিকাটি মেহেরপুরের বিদগ্ধ মহলে খুবই সমাদৃত হয়েছিল। |
প্রকাশকালঃ ২৮ ফাল্গুন, ১৩৮৫ বঙ্গাব্দ ১৩ মার্চ, ১৯৭৯ খ্রিস্টীয় |
(৫) |
সাপ্তাহিক পরিচয় |
এসএম তোজাম্মেল আযমের সম্পাদনায় ১৯৮৫সালে পরিচয় নামে একটি সাপ্তাহিক মেহেরপুরশহরের কাথুলী সড়কের গফুরপ্রিন্টিং প্রেসে মুদ্রিত হয়ে প্রকাশিত হতে থাকে। ১৯৮৭সালে এর প্রকাশনাবন্ধ হয়ে ১৯৯১ সাল থেকে পুনরায় প্রকাশিত হতে থাকে। প্রকাশনাঅনিয়মিত। |
প্রকাশকালঃ ১৯৮৫ খ্রিস্টীয় সাল |
(৬) |
দৈনিক আযম |
এসএম তোজাম্মেল আযমের সম্পাদনায় ১৯৯২সালের মার্চ মাস থেকে দৈনিক আযম নামে একটিসংবাদপত্র প্রকাশিত হচ্ছে। এপত্রিকাটির প্রকাশনা অনিয়মিত। |
প্রকাশকালঃ ১৯৯২ খ্রিস্টীয় সাল |
(৭) |
সাপ্তাহিক চুম্বক |
১৩৯২বাংলা সনের ১২ই চৈত্র মোতাবেক ১৯৮৬খ্রিস্টীয় সালের ২৬শে মার্চ মেহেরপুর কোর্টরোডের লুমা প্রিন্টিং প্রেসথেকে সাপ্তাহিক চুম্বক প্রকাশিত হয়। প্রায় এক বছরনিয়মিত প্রকাশনার পরসরকারের নির্দেশে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। এইপত্রিকার সম্পাদকও প্রকাশক ছিলেন- অ্যাডভোকেট সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। |
প্রকাশকালঃ ১২ চৈত্র, ১৩৯২ বঙ্গাব্দ ২৬ মার্চ, ১৯৮৬ খ্রিস্টীয় বন্ধ হবার তারিখঃ ১৯৮৭ খ্রিস্টীয় সন |
(৮) |
সাপ্তাহিক মুজিবনগর |
১৩৯৫বাংলা সনের ২৬শে আষাঢ় ১৯৮৮ খ্রিস্টীয়সালের ১১ই জুলাই মেহেরপুর কোর্টরোডের লুমা প্রিন্টিং প্রেস থেকেসাপ্তাহিক মুজিবনগর প্রথম প্রকাশিতহয়। পত্রিকাটি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জনকরে। অ্যাডভোকেট সৈয়দ আমিনুল ইসলামপত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক।পত্রিকাটির প্রকাশনা অনিয়মিত এবং এখন আর প্রকাশিতহচ্ছে না। |
প্রকাশকালঃ ২৬ আষাঢ়, ১৩৯৫ বঙ্গাব্দ ১১ জুলাই, ১৯৮৮ খ্রিস্টীয় |
(৯) |
পাক্ষিক পশ্চিমাঞ্চল |
রুহুলকুদ্দুস টিটোর সম্পাদনায় মেহেরপুরকাঁসারীপাড়া থেকে ১৯৯২ সালের ১৪ই ফ্রেবুয়ারি পাক্ষিকপশ্চিমাঞ্চল প্রথমপ্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি ঢাকা থেকে কম্পিউটার কম্পোজে প্রকাশিতহতো।পত্রিকাটি এখন আর প্রকাশিত হচ্ছে না। |
প্রকাশকালঃ ১৪ ফেব্রম্নয়ারি, ১৯৯২ খ্রিস্টীয় |
(১০) |
সাপ্তাহিক মেহেরপুর/ দৈনিক মেহেরপুর |
১৯৯২সাল থেকে অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদখানের সম্পাদনায় রশিদ হাসান খান আলো কর্তৃকসাপ্তাহিক মেহেরপুর প্রকাশিতহয়। পরবর্তীতে পত্রিকাটি দৈনিক হিসেবে প্রকাশিতহচ্ছে। বর্তমানে রশিদহাসান খান আলো পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক। প্রকাশনাঅনিয়মিত। |
প্রকাশকালঃ ১৯৯২ খ্রিস্টীয় সাল |
তথ্যসূত্রঃ
১। মেহেরেপুরের ইতিহাস -সৈয়দ আমিনুল ইসলাম।
২। মেহেরপুর জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য- তোজাম্মেল আজম।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS